বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি কি? সুবিধা ও বের করার উপায় জানুন
সাধারণত বিকাশে প্রতিটি লেনদেন শেষে একটি ট্রানজেকশন আইডি দেয়া হয়। এই আইডি উক্ত লেনদেনের নির্দিষ্ট প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি কি এবং কিভাবে বের করে সেটি যদি জানতে চান তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন।
এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করার উপায় জানাবো। কিভাবে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি দেখতে হয় এবং বিকাশ ট্রানজেকশন আইডির সুবিধা কি বিস্তারিত তথ্য এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন-
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি কি?
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি হচ্ছে বিকাশের লেনদেনের একটি প্রমাণ। যখন আমরা বিকাশে টাকা আদান-প্রদান, ক্যাশ আউট ও মোবাইল রিচার্জ করি তখন একটি ট্রানজেকশন আইডি তৈরী হয় এবং সেই ট্রানজেকশন আইডি আমরা এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারি। এই ট্রানজেকশন আইডি হচ্ছে আমরা যে বিকাশে লেনদেন করি তার একটি নির্দিষ্ট প্রমাণ।
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডির মাধ্যমে বোঝা যায় সঠিকভাবে বিকাশে লেনদেন হয়েছিল। সাধারণত বিকাশে যে কাজই করা হোক না কেন যদি সেটা পেমেন্ট বিষয় হয় তাহলে অবশ্যই ট্রানজেকশন আইডি পাওয়া যায়। এই ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পারি যে সঠিকভাবে বিকাশে টাকা আদান প্রদান করতে পেরেছি।
আরও জানুনঃ বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট লিমিট ও চেক করার নিয়ম.
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডির সুবিধাঃ
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বিকাশের প্রতিটি লেনদেনের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। এর অনেক সুবিধা রয়েছে। নিম্নে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডির সকল সুবিধা দেয়া হলো-
- লেনদেন যাচাইঃ বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি লেনদেন এর প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। যদি বিকাশে লেনদেন করতে গিয়ে কোন সমস্যা হয় তাহলে ট্রানজেকশন আইডির মাধ্যমে উক্ত লেনদেন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়।
- লেনদেন নিরাপত্তাঃ বিকাশের প্রতিটি লেনদেনে আলাদা আলাদা ট্রানজেকশন আইডি থাকে। এর ফলে লেনদেনের তথ্য ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না এবং প্রতিটি লেনদেন অনেক নিরাপত্তার সাথে হয়।
- পেমেন্ট প্রদানঃ যখন আমরা অনলাইনে বিকাশে পেমেন্ট করি তখন আমাদেরকে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি সাবমিট করার প্রয়োজন হয়। বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি সাবমিট করার মাধ্যমে যার কাছে আমরা বিকাশে টাকা পাঠাই সেই ব্যক্তি খুব সহজেই বুঝতে পারে যে সেই টাকা আমরা পাঠিয়েছিলাম। অতঃপর সেই ব্যক্তি নিশ্চিত হয়ে আমাদের পেমেন্ট রিসিভ করতে পারে।
- লেনদেন ট্রাক করাঃ আপনার বিকাশ একাউন্টের টাকা কোথায় গেছে, কাকে ও কখন পাঠানো হয়েছে ইত্যাদি তথ্য বিকাশের ট্রানজেকশন আইডির মাধ্যমে খুব সহজেই জানা যায়।
- কাস্টমার সেবা দ্রুত পাওয়াঃ বিকাশের লেনদেনজনিত সমস্যার কারণে যদি কাস্টমার কেয়ারে কথা বলেন তখন তারা আপনার কাছে ট্রানজেকশন আইডি চাইবে। আপনি যদি ট্রানজেকশন আইডি দিতে পারেন তাহলে দ্রুত কাস্টমার কেয়ার থেকে আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন।
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করার নিয়মঃ
যখন আমরা বিকাশে লেনদেন, রিচার্জ অথবা ক্যাশ আউট করি তখন একটি ট্রানজেকশন আইডি এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারি। তবে সাধারণত দুইটি মাধ্যমে বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি বের করা যায়। সেগুলো হচ্ছে-
- বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে
- সরাসরি এসএমএসের মাধ্যমে।
যদি আপনার কাছে বিকাশ অ্যাপ থাকে তাহলে আপনি বিকাশে পেমেন্ট করা সকল ট্রানজেকশন আইডি একসাথে দেখতে পারবেন। তাহলে দেখে নিন যেভাবে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এবং সরাসরি এসএমএসের মাধ্যমে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করতে হয় -
আরও জানুনঃ বিকাশের সকল লেনদেন হিস্টরি দেখার উপায়.
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করার উপায়ঃ
বিকাশের যেকোনো লেনদেনের ট্রানজেকশন আইডি বের করার জন্য সবথেকে সহজ মাধ্যম হচ্ছে বিকাশ অ্যাপ। আপনার মোবাইলে বিকাশ অ্যাপ না থাকলে প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করে নিবেন। এরপর বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ট্রানজেকশন আইডি বের করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করবেন-
ধাপ ১: প্রথমে আপনার বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করবেন। এরপর নিচের স্ক্রীনশট দেখানো বিকাশ আইকনে ক্লিক করতে হবে-
ধাপ ২: অতঃপর আপনারা নিচের স্ক্রীনশটের মতো বিকাশের মেনু থেকে স্টেটমেন্ট নামে একটি অপশন দেখতে পারবেন। বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করার জন্য আমাদেরকে এই স্টেটমেন্ট অপশনে প্রবেশ করতে হবে-
ধাপ ৩: এখন আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে সকল লেনদেনের হিসাব এবং ট্রানজেকশন আইডি দেখতে পারবেন। নিচের স্ক্রিনশট দেখলে বুঝতে পারবেন আমার বিকাশ একাউন্টে লেনদেনের বিবরণী এবং ট্রানজেকশন আইডি দেখাচ্ছে-
এই ছিলো বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি দেখার নিয়ম। এভাবে আপনারা খুব সহজেই উপরে দেখানো পদ্ধতিতে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশের সকল ট্রানজেকশন আইডি বের করতে পারবেন।
বিঃদ্রঃ আপনি যে পেমেন্টের বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করতে চাচ্ছেন সেই পেমেন্টের বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি দেখে নিবেন। কারণ যখন আমরা বিকাশে পেমেন্ট করি তখন প্রতিবার পেমেন্টে ট্রানজেকশন আইডি পরিবর্তন হয়। এই কারণে ভিন্ন ভিন্ন পেমেন্টের ভিন্ন ভিন্ন ট্রানজেকশন আইডি হয়ে থাকে।
বাটন মোবাইলে বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি দেখার নিয়মঃ
যারা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করেন না অথবা বাটন মোবাইল ব্যবহার করেন তারা চাইলে সরাসরি এসএমএসের মাধ্যমে বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি জেনে নিতে পারবেন। বিকাশে মোবাইল রিচার্জ, টাকা আদান প্রদান সহো অন্যান্য বিল প্রদান করার সময় ট্রানজেকশন আইডি এসএমএসের মাধ্যমে এবং বিকাশ অ্যাপে সেভ থাকে।
অর্থাৎ বিকাশে পেমেন্ট করার পর ট্রানজেকশন আইডি আমরা এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারি। যখন আমরা বিকাশে পেমেন্ট করি তখন নিচের স্ক্রীনশটের মতো সকল পেমেন্টের ট্রানজেকশন আইডি এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারি-
এভাবে আমরা খুব সহজেই এসএমএসের মাধ্যমে বিকাশের সকল লেনদেনের ট্রানজেকশন আইডি জেনে নিতে পারি। যদিও বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি এসএমএস এবং বিকাশ অ্যাপ দুই জায়গায় সেভ থাকে তারপরও আপনার যেখানে ভাল লাগে সেখান থেকেই বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করতে পারবেন।
বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি কি ভিন্ন ভিন্ন হয়?
উঃ হ্যা, বিকাশের প্রতিটি লেনদেনের ট্রানজেকশন আইডি আলাদা হয়। অর্থাৎ আপনারা বিকাশ থেকে করা প্রতিটি লেনদেনের জন্য আলাদা আলাদা ট্রানজেকশন আইডি দেখতে পারবেন।
বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি কি পরিবর্তন হয়?
বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি কখনো পরিবর্তন হয় না। আপনি কখনো বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি পরিবর্তন করতে পারবেন না। বিকাশের প্রতিটি লেনদেনের জন্য যে ট্রানজেকশন আইডি দেয়া হবে সেটি উক্ত লেনদেনের জন্য সব সময় থাকবে।
আরো দেখুনঃ বিকাশ চার্জ ক্যালকুলেটর ব্যাবহার করার নিয়ম ও সুবিধা.
শেষ কথাঃ
বিকাশের লেনদেনের জন্য ট্রানজেকশন আইডি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিকাশে লেনদেন করার পর ট্রানজেকশন আইডি সংরক্ষণ করে রাখলে পরবর্তীতে লেনদেন সম্পর্কিত সকল সমস্যার সমাধান খুব সহজেই পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে আপনারা বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি কি, সুবিধা ও বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি বের করার নিয়ম জানতে পেরেছেন। যদি আপনাদের কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় অথবা বিকাশের ট্রানজেকশন আইডি সম্পর্কে আরো কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টে অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তবে এরকম ব্যাংকিং টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক, ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব ও গুগল নিউজে ফলো করে পাশে থাকতে ভুলবেন না।