ইউটিউবে বেশি ডাটা খরচ হওয়ার সমাধান (ইউটিউব ডাটা সেভিং)
ইউটিউব ভিডিও দেখতে গিয়ে আপনার কি বেশি এমবি কাটতেছে? তাহলে এই আর্টিকেল হাতে যাচ্ছে আপনার জন্য সমাধান। কেননা, এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে ইউটিউব ডাটা সেভিং চালু করার উপায় দেখাবো।
আপনারা ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি কমানোর নিয়ম জেনে অল্প এমবি খরচ করে ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবেন। চলুন তাহলে ইউটিউবে বেশি এমবি ফুরানোর সমাধান জেনে নেয়া যাক-
ইউটিউব ডাটা সেভিং চালু করার কারণ ও সুবিধাঃ
ইউটিউবে ভিডিও দেখতে গিয়ে ডাটা বেশি খরচ হলে এর সমাধান হচ্ছে ডাটা সেভিং চালু করা। আপনি যদি ডাটা সেভিং চালু করেন তাহলে যেসব সুবিধাগুলো পাবেন তা হচ্ছে-
- ডাটা খরচ কম হবেঃ ইউটিউবে ভিডিওতে যদি অস্বাভাবিক বেশি ডাটা খরচ হয় তাহলে ডাটা সেভিং চালু করলে কম ডাটা খরচ হবে। এছাড়াও ডাটা সেভিং চালু করলে স্বাভাবিকের তুলনায় কম ডাটা খরচ হয়ে থাকে।
- ইন্টারনেটের গতি কম থাকলেও ভিডিও থামবে নাঃ যদি আপনি ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলেও আপনার ভিডিও থামবে না।
- কম কোয়ালিটিতে ভিডিও চালুঃ যখন আপনি ইউটিউবে কোনো ভিডিও চালু করবেন তখন অটোমেটিক কম রেজুলেশনে ভিডিও চালু হবে। এতে আপনার ডাটা খরচ অনেক কম হবে।
- ব্যাটারী সাশ্রয়ঃ ব্যাটারি সেভিং চালু থাকলে মোবাইলের ব্যাটারির উপর চাপ কম পড়ে। এর ফলে ব্যাটারির চার্জ বেশি থাকে এবং ব্যাটারি সাশ্রয় হয়।
- বাফারিং হয়নাঃ ভিডিও কম রেজুলেশনে চলায় সাধারণত বাফারিং হয় না।
ইউটিউবে বেশি এমবি কাটার সমাধান কি?
ইউটিউবে যদি বেশি এমবি কাটে তাহলে এর সমাধান হিসেবে দুইটি কাজ করতে হবে। কাজগুলো হচ্ছে-
- ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি কমানো।
- ইউটিউব ডাটা সেটিং চালু।
সাধারণত ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি কমানো এবং ইউটিউব ডাটা সেটিং চালু করার মাধ্যমে ইউটিউব এর বেশি এমবি কাটার সমস্যার সমাধান করা যায়। চলুন তাহলে উক্ত দুইটি কাজ কিভাবে করা যায় সেটি জেনে নেয়া যাক-
ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি কমানোর নিয়মঃ
ইউটিউবের ভিডিও ওপেন করার পর সেই ভিডিওর কোয়ালিটি কমানো যায়। কিন্তু প্রত্যেকটি ভিডিও ওপেন করে তার রেজুলেশন কমানো অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কঠিন ব্যাপার। তাই সহজ উপায় হচ্ছে সেটিং থেকে ইউটিউবের ভিডিও কোয়ালিটি কমানো। এতে যে ভিডিও ওপেন করা হবে সেই ভিডিওর কোয়ালিটি অটোমেটিক কমে যাবে। এতে ডাটা খরচ কম হবে। এই কাজের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-
ধাপ ১: প্রথমে ইউটিউব অ্যাপে প্রবেশ করুন। এরপর নিচের স্ক্রিনশটের মতো আপনার ইউটিউব প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন-
ধাপ ২: এবার সেটিং অপশনে ক্লিক করুন-
ধাপ ৩: এবার আপনারা সেটিং অপশনে Video quality preference নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। ইউটিউবের ভিডিও কোয়ালিটি কমানোর জন্য এই Video quality preference অপশনে প্রবেশ করতে হবে-
ধাপ ৪: এবার আপনি মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে ইউটিউব ভিডিও দেখার সময় ভিডিও কোয়ালিটি কেমন থাকবে সেটি নির্বাচন করতে পারবেন। এখানে অপশন গুলোর কাজ হচ্ছে-
- Auto - মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য যদি আপনি ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি Auto করে দেন তাহলে আপনার ইউটিউব ভিডিও নেটওয়ার্ক অনুযায়ী প্লে হবে। অর্থাৎ আপনার মোবাইল নেটওয়ার্ক যদি ভালো থাকে তাহলে ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি ভালো হবে। আর ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি যতো ভালো হবে আপনার ডাটা ততো বেশি খরচ হবে।
- Higher picture quality - যদি আপনি মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য Higher Picture Quality অপশন সিলেক্ট করেন তাহলে ইউটিউব এর সকল ভিডিও আপনার মোবাইলে বেশি কোয়ালিটিতে প্লে হবে। এতে আপনার মোবাইল ডাটা অনেক বেশি খরচ হবে।
- Data Saver - যদি আপনি মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য Data Saver অপশন চালু করেন তাহলে আপনার মোবাইল ডাটা অনেক কম খরচ হবে। কারণ মোবাইলে ডাটা সেভার অপশন চালু করলে ইউটিউব ভিডিও কম কোয়ালিটিতে প্লে হবে। এতে আপনার মোবাইল ডাটা বেশি খরচ হবে না।
এতএব, ইউটিউবে ডাটা সাশ্রয় করার জন্য অবশ্যই মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য Data Saver অপশন চালু রাখবেন। এছাড়াও ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের জন্য যেকোন অপশন চালু রাখতে পারেন।
এই ছিল ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি কমানোর উপায়। আপনারা উপরে দেখানো পদ্ধতিতে ইউটিউব ভিডিও রেজুলেশন কমাতে পারবেন। এতে প্রত্যেকটা ভিডিওতে অটোমেটিক কম রেজুলেশনে ভিডিও চালু হবে এবং ডাটা খরচ কম হবে।
ইউটিউব ডাটা সেভিং চালু করার নিয়মঃ
ইউটিউবে ডাটা সেভিং অপশন চালু রাখার মাধ্যমে অল্প এমবি দিয়েই দীর্ঘ সময় ইউটিউব ভিডিও দেখা যায়। ইউটিউবে ডাটা সেটিং অপশন চালু করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-
ধাপ ১: প্রথমে ইউটিউব অ্যাপে প্রবেশ করুন। এরপর নিচের স্ক্রিনশটের মতো আপনার ইউটিউব প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে প্রবেশ করুন-
ধাপ ২: এবার সেটিং অপশনে ক্লিক করুন-
ধাপ ৩: এবার আপনারা সেটিং অপশনে Data Saving নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। ইউটিউবে ডাটা সাশ্রয় করার জন্য এই Data Saving অপশনে প্রবেশ করতে হবে-
ধাপ ৪: এবার আপনি Data saving mode অপশন চালু করে দিবেন। এই অপশন চালু করে দিলে নিচের সকল অপশন অটোমেটিক চালু হবে। যদি কোনো অপশন চালু না থাকে তাহলে ম্যানুয়ালি সেটা চালু করে দিবেন-
এই ছিলো ইউটিউবে ডাটা সেভিং চালু করার নিয়ম। আপনারা উপরে দেখানো পদ্ধতিতে ইউটিউবে ডাটা সেভিং অপশন চালু করার মাধ্যমে ডাটা সাশ্রয় করে ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
ইউটিউব ভিডিও দেখতে গিয়ে বেশি এমবি খরচ হওয়ার সমাধান করা অথবা অল্প ইন্টারনেট খরচে ইউটিউব ভিডিও দেখা, কারণ যেটাই হোক না কেনো যদি ইউটিউবে ডাটা সেভিং অপশন চালু রাখেন তাহলে অল্প এমবি দিয়েই দীর্ঘ সময় ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারবেন। ইতিমধ্যে আপনারা "কিভাবে ইউটিউব ডাটা সেভিং চালু ও ভিডিও কোয়ালিটি অপশন কমাতে হয়" সেটি জানতে পেরেছেন। যদি এই সম্পর্কে আরো কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্ট অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও ইউটিউব সম্পর্কে সকল টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক ও ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন।