বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পূর্ণ ২৫ লাইন জানুন (PDF সহো)
প্রতিটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশের জাতীয় সংগীত রয়েছে। ঠিক তেমনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেরও জাতীয় সংগীত রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানা এবং মুখস্ত রাখা। অনেকেই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত না জানায় এখন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানতে চাচ্ছেন।
যদি আপনি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানতে চান তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পূর্ণ ও pdf দেয়া হবে। আপনারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত বিস্তারিত তথ্য সহো জানার পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড করতে পারবেন-
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত |
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্যাবলীঃ
আমার সোনার বাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মূলত আমার সোনার বাংলা হচ্ছে একটি গান যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে রচনা করে। বাউল গায়ক গগন হরকরার গান "আমি কোথায় পাব তারে" থেকে এই গানের সুর ও সঙ্গীত নেয়া হয়েছে। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল।
১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে আমার সোনার বাংলা গানটির প্রথম দশ চরণ সদ্য গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়। ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় আমার সোনার বাংলা গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। এই বছরই ৭ সেপ্টেম্বর সঞ্জীবনী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরে এই গানটি মুদ্রিত হয়। স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ গঠিত হয়।
পরবর্তীতে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভা শেষে ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহারে আমার সোনার বাংলা গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা এবং সুরকার হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আরো দেখুনঃ বীজগণিতের সকল সূত্র সমূহ (Class 6, 7, 8, 9, 10 সব ক্লাসের).
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (প্রথম ১০ লাইন)
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা গান থেকে নেয়া হয় যেটি মূলত ২৫ লাইনের। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ চরণ জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হলে আমরা আমার সোনার বাংলা গানের প্রথম দশ লাইন পড়ে থাকি। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের এই মূল দশ লাইন হচ্ছে-
আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ,
তোমার বাতাস,
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥
কী শোভা, কী ছায়া গো,
কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে,
নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদন খানি মলিন হলে,
ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি॥
এই হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। উপরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মূল ১০ চরন দেয়া হয়েছে। এবার আপনারা বাংলাদেশের পুরো জাতীয় সংগীত জেনে নিন-
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পূর্ণ (২৫ লাইন)
আমরা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ১০ লাইনের গাইলেও মূলত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা গান থেকে নেয়া হয় যেটি ২৫ লাইনের। এই গানটির প্রথম দশ চরণ জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হলে আমরা আমার সোনার বাংলা গানের প্রথম দশ লাইন পড়ে থাকি। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মূল ১০ লাইন সহো সম্পূর্ণ ২৫ লাইন হচ্ছে-
আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ,
তোমার বাতাস,
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে
আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥
কী শোভা, কী ছায়া গো,
কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে,
নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার
কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদন খানি মলিন হলে,
ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি॥
তোমার এই খেলা ঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
তোমারি ধুলা মাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে,
ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥
ধেনু-চরা তোমার মাঠে,
পারে যাবার খেয়া ঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই,
ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে–
দে গো তোর পায়ের ধূলা,
সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর,
মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥
এই হচ্ছে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত। উপরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের প্রথম ১০ লাইন সহো মোট ২৫ লাইন দেয়া হয়েছে। তবে এই ২৫ লাইনের মধ্যে শুধুমাত্র প্রথম ১০ লাইন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পিডিএফ বিবরণঃ
আপনারা এখানে যে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ফাইল পাবেন সেই পিডিএফ ফাইলের বিস্তারিত তথ্য জানুন-
- PDF নামঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
- লেখকঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- প্রকাশ সালঃ ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২
- ভাষাঃ বাংলা (Bangla/Bengali)
- পিডিএফ ধরণঃ জাতীয় সঙ্গীত।
- সাইজঃ ১ এমবি।
- পাতার সংখ্যাঃ ১ টি।
- ফরম্যাটঃ পিডিএফ (PDF)
এই ছিল বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পিডিএফ ফাইলের সকল বিস্তারিত তথ্যাবলী।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf download
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf আকারে ডাউনলোড করে নিন। নিম্নে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পিডিএফ ফাইল দেয়া হলো-
এই হচ্ছে বেলা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পিডিএফ ফাইল। আপনারা উপরের লিংক থেকে bangladesher jatio songit পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে মোবাইলে অথবা কম্পিউটারে খুব সহজেই পড়তে পারবেন।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানার গুরুত্বঃ
বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জাতীয় সংগীত জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশের জাতীয় সংগীত রয়েছে। ঠিক তেমনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেরও জাতীয় সংগীত রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানা এবং মুখস্ত রাখা।
সাধারণত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত জাতীয় সংগীত পাঠ করা হয়। তাই এসব শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো করেই জানে। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সকল পেশার এবং সকল বয়সের মানুষের বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত জানা উচিত। এতে দেশের প্রতি অনুগত বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পর্কে বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
আপনারা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত সম্পর্কে যেসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইতে পারেন সেইসব সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর নিম্নে দেয়া হলো-
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা কে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হচ্ছেন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কত সালে প্রকাশ হয়?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে প্রকাশ হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কত লাইন?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ১০ লাইনের।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রথম কত সালে রচিত হয়েছিল?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত একটি গান থেকে নেয়া হয়েছে। এই গানটি প্রথম রচিত হয় ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত মোট কত লাইন?
আমরা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রথম দশ লাইন গাইলেও মূলত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ২৫ লাইনের। অর্থাৎ আমার সোনার বাংলা গানটি ২৫ লাইনের এবং এখান থেকে প্রথম ১০ লাইন জাতীয় সংগীত হিসেবে নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গীতবিতান কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কে লিখেছেন?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদক কে?
উঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদক সৈয়দ আলী আহসান।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রথম "বঙ্গদর্শন" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুরকার কে?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন শপথ বাক্য.
বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত উপসংহারঃ
এই পোস্টে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত বিস্তারিত তথ্য সহ দেয়া হয়েছে। আপনারা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে পেরেছেন। যদি আপনাদের কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় অথবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত সম্পর্কে বিস্তারিত আরো কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। তবে এরকম সকল নতুন শিক্ষণীয় পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক, ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব ও গুগল নিউজে ফলো করুন।