গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর? অথবা প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর?
গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর? গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর? এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। এছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষায় গ্রামীণ সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন আসে। যদি আপনি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে না জানেন তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।
কারণ এই পোস্টে "গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর?" প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে। আপনারা পুরো পোস্ট পড়ার মাধ্যমে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে এবার গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি জেনে নিন-
গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে জানার গুরুত্বঃ
গ্রামীণ সম্প্রদায়ে কৃষক ও কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বসবাস করে থাকে। গ্রামীণ সম্প্রদায়ের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কৃষিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ সম্প্রদায় গড়ে উঠে। গ্রামীণ সমাজের মানুষ সহজ ও সরলভাবে বসবাস করে।
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান সাবজেক্টের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে - "গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর? অথবা, গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর? অথবা, গ্রামীণ সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো কি?" ইত্যাদি।
নিম্নে আমি সেই সকল প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে দিয়েছি। আপনারা উত্তরটি পড়ে "গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর? গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর? গ্রামীণ সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো কি?" এই সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন এবং দিতে পারবেন। তাহলে এবার গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন-
প্রশ্নঃ গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর? অথবা, গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ ভূমিকা : গ্রামীণ সম্প্রদায়ে কৃষক ও কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বসবাস করে থাকে। গ্রামীণ সম্প্রদায়ের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। গ্রামীণ সম্প্রদায়ে কৃষিজীবী মানুষ যৌথ পরিবারের মাধ্যমে বসবাস করে থাকে। কৃষিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ সম্প্রদায় গড়ে উঠে। গ্রামীণ সম্প্রদায় বলতে এমন একটি সমাজব্যবস্থাকে বুঝায় যেখানে কৃষি শুধু পেশাই নয়, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনপদ্ধতিও বটে।
গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য : মানুষের প্রাচীন সমাজব্যবস্থা হলো গ্রামীণ সমাজ বা সম্প্রদায়। গ্রামীণ সম্প্রদায়ে সাধারণত কৃষক শ্রেণি বসবাস করে। গ্রামীণ সমাজের মানুষ সহজ ও সরলভাবে বসবাস করে। নিম্নে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর হলো :
১. কৃষিনির্ভর জীবন ব্যবস্থা : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য কৃষিনির্ভর জীবনব্যবস্থা। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি। কৃষিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ জীবনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। কৃষকদের সব সাধকের বড় সাধক বলে অভিহিত করা হয়। কৃষির সাথে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। কৃষির সাথে গ্রামীণ মানুষের সুখ-দুঃখ জড়িয়ে আছে।
২. যৌথ পরিবার : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যৌথ পরিবার। যৌথ পরিবার গড়ে উঠে কৃষিকে কেন্দ্র করে। যৌথ পরিবারে সকল সদস্য পরস্পর পরস্পরের বিপদ-আপদে এগিয়ে আসে। যৌথ পরিবারে কৃষিকাজ সহজে সম্পাদন করা যায়। যৌথ পরিবার গ্রামীণ সমাজের ঐতিহ্য বহন করে।
৩. ধর্মবিশ্বাস : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মভীরু। সকল কাজকর্ম ধর্মের উপর নির্ভর করে। কৃষিকাজ প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। বৃষ্টিপাত হলে ফসল ভালো হয় বৃষ্টিপাত কম হলে ফসল নষ্ট হয়। গ্রামের মানুষে ধর্মীয় কিছু কুসংস্কার বিশ্বাস করে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে গ্রামের মানুষ আনন্দ উপভোগ করে।
৪. সহজ-সরল জীবনযাপন : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সাধারণ জীবনযাপন। গ্রামের মানুষ সহজ- সরলভাবে বসবাস করতে ভালোবাসে। গ্রামের মানুষ অযথা টাকা-পয়সা নষ্ট করে না। তারা দুবেলা দুমুঠো খেতে পারলে সন্তুষ্ট হয়। চালাকির মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করে না। গ্রামের মানুষ পরস্পর একে অন্যের বিপদে আপদে এগিয়ে আসে ।
৫. নারী শিক্ষায় পিছিয়ে : গ্রামের মানুষ নারীদের শিক্ষিত করতে আগ্রহী নয়। ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের গৃহে বন্দি করে রাখে। তারা মনে করে নারীদের প্রধান কাজ স্বামী ও সংসার দেখাশুনা করা। তাই লেখাপড়া শেখা নারীদের প্রয়োজন নেই। গ্রামের লোকেরা নারীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে অনীহা প্রকাশ করে ।
৬. কুসংস্কার : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কুসংস্কারাচ্ছন্ন। গ্রামের লোক বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাসী। প্রাচীনকালে কলেরা, ডায়রিয়াকে অস্তিত্বশীল আত্মার সাথে তুলনা করতো। গ্রামীণ লোকেরা অনাবৃষ্টিতে ব্যাঙের বিয়ে দিতো, কোনো ব্যক্তির রোগ হলে ফকির দ্বারা চিকিৎসা করতো, ফসলের রোগ বালাই দূর করতো ঝাড়-ফুঁক দ্বারা ।
৭. অন্তর্কলহ : গ্রামীণ লোকেরা পরস্পরের মধ্যে অন্তর্কলহে জড়িয়ে পড়তো। সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া, মারামারি করতো। গ্রামীণ সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা অন্তর্কলহ। প্রতিবেশী ও ভাইবোনের মধ্যে অন্তর্কলহ ছিল। সামান্য বিষয় নিয়ে অনেক সময় বড় আকার ধারণ করতো।
৮. ঋণগ্রস্ততা : গ্রামীণ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ঋণগ্রস্ততা। গ্রামীণ কৃষকেরা বিভিন্ন কারণে কৃষি উৎপাদনে করে লোকসানের সম্মুখীন হয়। কৃষি উৎপাদনে কৃষকেরা ঋণ নিয়ে থাকে। ফসল ভালো না হলে কৃষকেরা ঋণ পরিশোধ করতে পারে না। ফলে কৃষকের আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়। কৃষকেরা | গ্রামীণ মহাজনদের নিকট থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সম্প্রদায়ের লোকজন বিপদে-আপদে পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকে। গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষ সহজ সরল হয়। সাধারণভাবে জীবনযাপন করে থাকে। গ্রামীণ সম্প্রদায় মূলত কৃষিকাজের কেন্দ্রস্থল। গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ঐতিহ্য, প্রথা, জীবনপ্রণালি বিদ্যমান। যার ফলে অন্যান্য সমাজব্যবস্থা থেকে গ্রামীণ সম্প্রদায়কে পৃথক করা যায়।
পরিশেষে বলতে চাচ্ছিঃ
এই ছিলো গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আপনারা উপরের পোস্ট থেকে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি জানার পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা "গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ কর? গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর?" এই সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। আশা করছি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করো প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে। এরকম আরো নিত্য নতুন পোস্ট পেতে ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে মেসেজের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।