পথহাঁটা কবিতা - জীবনানন্দ দাশ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হচ্ছে জীবনানন্দ দাশ। পথহাঁটা কবিতাটি তার লেখা বিখ্যাত একটি কবিতা। এই কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ নাগরিক জীবনের ব্যস্ততা, যান্ত্রিকতা এবং নিঃসঙ্গতা খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
এই আর্টিকেলে জীবনানন্দ দাশের পথহাঁটা কবিতা দেয়া হবে। আপনারা পথহাঁটা কবিতা সম্পূর্ণ এখানে পাবেন। তাহলে চলুন পথহাঁটা কবিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাক-
![]() |
পথহাঁটা কবিতা |
পথহাঁটা কবিতার লেখক পরিচিতিঃ
পথহাঁটা কবিতার লেখক এর নাম হচ্ছে জীবনানন্দ দাশ। জীবনানন্দ দাশ পথহাঁটা কবিতাটি লিখেছেন। ১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জীবনানন্দ দাশ জন্মগ্রহণ করেন। বিক্রমপুরের গাওপাড়া গ্রামে তাঁদের আদি নিবাস ছিল।
তাঁর পিতা সত্যানন্দ দাশ ছিলেন স্কুলশিক্ষক ও সমাজসেবক। তিনি ব্রহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। জীবনানন্দ দাশের মাতা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন একজন কবি। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দ দাশের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়।
বিশেষত, জীবনানন্দ দাশ "রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থে" যেভাবে আবহমান বাংলার চিত্ররূপ ও অনুসূক্ষ্ম সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ হিসেবে খ্যাত হয়েছেন। ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর কলকাতায় জীবনানন্দ দাশের ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুনঃ আবার আসিব ফিরে কবিতা.
পথহাঁটা কবিতা - জীবনানন্দ দাশঃ
- কবি - জীবনানন্দ দাশ।
- কবিতা - পথহাঁটা।
কী এক ইশারা যেন মনে রেখে একা একা শহরের পথ থেকে পথে
অনেক হেঁটেছি আমি; অনেক দেখেছি আমি ট্রাম-বাস সব ঠিক চলে;
তারপর পথ ছেড়ে শান্ত হয়ে চলে যায় তাহাদের ঘুমের জগতে:
সারারাত গ্যাস লাইট আপনার কাজ বুঝে ভালো করে জ্বলে।
কেউ ভুল করে নাকো-ইঁট বাড়ি সাইনবোর্ড জানালা কপাট ছাদ সব
চুপ হয়ে ঘুমাবার প্রয়োজন বোধ করে আকাশের তলে।
একা একা পথ হেঁটে এদের গভীর শান্তি হৃদয়ে করেছি অনুভব;
তখন অনেক রাত-তখন অনেক তারা মনুমেন্ট মিনারের মাথা
নির্জনে ঘিরেছে এসে;-মনে হয় কোনোদিন এর চেয়ে সহজ সম্ভব
আর কিছু দেখেছি কি: একরাশ তারা আর মনুমেন্ট ভরা কলকাতা?
চোখ নিচে নেমে যায়-চুরুট নীরবে জ্বলে-বাতাসে অনেক ধুলো খড়;
চোখ বুজে একপাশে সরে যাই-গাছ থেকে অনেক বাদামি জীর্ণ পাতা
উড়ে গেছে; বেবিলনে একা একা এমনই হেঁটেছি আমি রাতের ভিতর
কেন যেন; আজো আমি জানি নাকো হাজার হাজার ব্যস্ত বছরের পর।
পথহাঁটা কবিতার মূল বিষয়বস্তু কি?
কবি জীবনানন্দ দাশ তার পথহাঁটা কবিতায় শহরের রাস্তায় একা হেঁটে চলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। এই কবিতায় শহরের ব্যস্ততা, ট্রাম-বাসের চলাচল, গ্যাস লাইটের আলো ইত্যাদি বিষয়বস্তু তিনি তুলে ধরেছেন। কবি যখন রাতের শহরে একা হেঁটে বেড়ান তখন তার মনে বিভিন্ন চিন্তা ও অনুভূতি জাগ্রত হয়। মূলত এই কবিতার মাধ্যমে কবি নাগরিক জীবনের একাকীত্ব এবং মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব তুলে ধরেছেন।
শেষ কথাঃ
বাংলা কবিতার মজা পাওয়ার জন্য পথহাঁটা কবিতা পড়া অত্যাবশ্যক। ইতিমধ্যে আপনারা জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত পথহাঁটা কবিতা সম্পূর্ণ জানতে পেরেছেন। কবিতাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করে তাদেরকেও জানাতে পারেন। এছাড়াও যদি এরকম আরো কোনো কবিতা চান তাহলে কমেন্টে অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।