বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ড জেনে নিন । বায়তুল হিকমার কার্যপদ্ধতি
বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। বায়তুল হিকমার কার্যপদ্ধতি এবং বায়তুল হিকমার প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। এই পোষ্টে বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা বায়তুল হিকমার কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ড |
বায়তুল হিকমার প্রতিষ্ঠাতাঃ
খলিফা আল মামুন 830 সালে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও অনুসরণের জন্য বাগদাদ নগরীতে বায়তুল হিকমা প্রতিষ্ঠা করেন। বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ড মূলত তিনটি বিভাগের মাধ্যমে পরিচালনা করা হতো। এ বিভাগগুলো হলো গ্রন্থাগার, শিল্পায়তন ও অনুবাদ ব্যুরো। বায়তুল হিকমা জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
আরো পড়ুনঃ নিজামিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
বায়তুল হিকমার কর্মকাণ্ডঃ
খলিফা আল মামুনের রাজত্বকাল ইসলামের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা ও গৌরবময় যুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। বায়তুল হিকমা এই গৌরবোজ্জ্বল সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক ছিল। এখানে পারসিক হিন্দু খৃষ্টান প্রভৃতি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পণ্ডিতগণ শিক্ষামূলক গবেষণা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা অনুশীলন ও অনুবাদ কাযে নিয়োজিত থাকিতেন।
বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বৈদেশিক কাজ হইতে দুত এবং প্রতিনিধি মারফত তিনি নানা দেশের জ্ঞানভান্ডারে সঞ্চিত পুস্তকের অনুবাদ কাজে নিয়োজিত থাকতেন। বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বৈদেশিক রাজ্য হতে দুত ও প্রতিনিধি মারফত তিনি নানা দেশের জ্ঞানভান্ডারে সঞ্চিতা পুস্তকের পান্ডুলিপি সংগ্রহ করে সেগুলো অনুবাদের ব্যবস্থা করেন।
তার পৃষ্ঠপোষকতায় গ্যালেন, ইউক্লিড, টলেমি প্রমুখ মানিষির বৈজ্ঞানিক গ্রন্থাবলি এবং বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক এরিস্টটল ও প্লেটোর পুস্তকগুলো আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। মামুন নিউকের পুত্র কোস্টার গ্রিক ও কালদীয় ভাষায় লিখিত গ্রন্থাবলী মানবকাহ এবং দুবান নামক ব্রাহ্মণ মনীষীদের উপর সংস্কৃত ভাষায় লিখিত ভারতীয় গনিত জ্যোতির্বিদ্যায় পুস্তকাবলি এবং ঈশা বিন এহিয়া, মুসা বিন খালিদ প্রমুখ পণ্ডিতেরা উপর পারস্য ভাষায় লিখিত গ্রন্থ রাজি আরবিতে অনুবাদের গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেন।
এভাবে অনুবাদ কার্যাবলী ও শিক্ষামূলক কর্মতৎপরতার মাধ্যমে বায়তুল হিকমা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রসারিত করে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে মুসলিম মনীষীগণ গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, দর্শন ফলিত জ্যোতিশাস্ত্র, সাহিত্য, ভূগোলশাস্ত্র, রসায়নবিদ্যা প্রভৃতি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখে।
আরো পড়ুনঃ বায়তুল হিকমা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায় যে বায়তুল হিকমা ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোকবর্তিকা স্বরূপ। শিক্ষামূলক গবেষণার জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা অনুশীলন ও অনুবাদ কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে বায়তুল হিকমা মুসলিম সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার জন্য বায়তুল হিকমার অবদান ছিল অপরিসীম।